সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬

১ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের বাইরে





ঢাকা: সরকারের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির হিসাব মতে দেশে বছরে প্রায় তিন লাখ রোগী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে মাত্র দুই লাখ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় এক লাখ যক্ষ্মা রোগী এখনও শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছেন।

রোগ শনাক্তকরণ প্রযুক্তির আরও আধুনিকায়ন হলে এ বাধা অনেকটা দূর হবে। তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে যেসব যক্ষ্মা রোগী চিকিৎসা নেন, তাদের তথ্যাদিও পুরোপুরি সরকারি তথ্যকেন্দ্রে আসতে হবে। যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের তথ্য সরকারি-বেসরকারি সব উৎস থেকে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ আইন কার্যকর করা হলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের যক্ষ্মা সংক্রান্ত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তা সহায়ক হবে।

সোমবার (২১ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস কক্ষে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সাংবাদিক ওরিয়েন্টশনে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভাগীয় পরামর্শক ডা. আহমেদ পারভেজ জাবিন এসব তথ্য জানান।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি), বাংলাদেশ হেল্থ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এনটিপি’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট ডা. মো. মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ হেলথ রির্পোটার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) সহ সভাপতি ডা. নুরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনটিপি’র ডিভিশনাল কনসালটেন্ট ডা. আহমেদ পারভেজ জাবীন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি, কর্মসূচি সহায়তা ও প্রযুক্তি বিষয়ক পরিচালক কেএএম মোরশেদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক টিবি কর্মসূচির প্রোগ্রাম হেড ডা. শায়লা ইসলাম এবং অ্যাডভোকেসি ফর স্যোশাল চেইঞ্জ বিভাগের কর্মসূচি সমন্বয়কারী সদরুল হাসান মজুমদার। 

মূল প্রবন্ধে ডা. আহমেদ পারভেজ জাবিন বলেন, সারা বিশ্বে ৩০ লাখ যক্ষ্মা রোগীকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি। বাংলাদেশে এ সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ ফুসফুসজনিত যক্ষ্মার বাইরে অন্য ধরনের যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা কঠিন। আরও বেশি যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করার লক্ষ্যে সরকার এখন শহর এলাকা ও শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক, নিম্নবিত্তদের বস্তি এলাকা ও ভাসমান মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

এতে উল্লিখিত যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা, শিশু যক্ষ্মা, শহরে নিম্নবিত্ত ও ভাসমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপ্রতুল জিন এপার্ট মেশিন, নতুন ও আরও কার্যকর ওষুধের অভাব ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৩৬৯৯ জন। যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের জন্য এ মুহূর্তে ৩৯টি জিন এ•পার্ট মেশিন থাকলেও চালু আছে ৩৩টি। সরকারের লক্ষ্য প্রতি জেলায় অন্তত একটি জিন এ•পার্ট মেশিন পৌঁছানো যা দিয়ে দ্রুত যক্ষ্মা শনাক্ত করা সম্ভব।

এতে আরও জানানো হয়, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে যক্ষ্মা রোগের ঝুঁকি ২.৫ থেকে ৩ শতাংশ বেশি।  


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: