শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২

শীত বস্ত্র বিতরণ করবে স্বদেশ মৃত্তিকা

শীত বস্ত্র বিতরণ করবে স্বদেশ মৃত্তিকা

স্টাফ করেসপনডেন্ট
শীত বস্ত্র বিতরণ করবে স্বদেশ মৃত্তিকা স্বদেশমৃত্তিকা মানব ঊন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতি বছরের মত এবছর এতিম ছাত্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সাল থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়ছে শীত। দিনভর ঘন কুয়াশায় অনেক সময় সূর্যও দেখা যায় না। হিমলে হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। কনকনে এই শীতে বস্ত্রহীন অসহায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। তাই সাধ্যমতো শীতবস্ত্র দিয়ে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো খুবই জরুরি। বস্ত্রহীন মানুষকে শীতবস্ত্র দানও ইবাদত। তাতে মহান আল্লাহ মানুষকে পুরস্কৃত করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। অনেকের স্বাভাবিক পোশাক থাকলেও শীত নিবারণে নেই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র। দেশব্যাপী সব সচ্ছল মানুষের উচিত, সাধ্য অনুযায়ী নিজ নিজ প্রতিবেশি গরিব-অসহায় মানুষকে শীতবস্ত্র দান করা। নিজেদের অতিরিক্ত শীতের কাপড় থাকলে তা দিয়ে হলেও সহযোগিতা করা। এক হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘কোনো মুসলমান কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করলে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। পানি পান করালে এরচেয়েও উত্তম বস্তু পান করাবেন।’ (আবু দাউদ) তাই সমাজের বিত্তবান ও মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষদের দূর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো একান্ত প্রয়োজন; তা না হলে গরিব-অসহায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করলেও এমন পরিস্থিতি থেকে শীতার্তদের দুঃখ-কষ্ট কমিয়ে আনা সহজ। মনে রাখা জরুরি দরিদ্র মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ মানবসেবা। এটি সওয়াবের কাজও বটে। বদরের যুদ্ধবন্দী হজরত আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুকেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, একবার মুদার গোত্র থেকে গলায় চামড়ার আবা পরিহিত বস্ত্রহীন কিছু লোক নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসে। তাদের করুণ অবস্থা দেখে প্রিয় নবির চেহারা বিষণ্ন হয়ে যায়। তিনি নামাজ শেষে সাহাবাদের লক্ষ্য করে দান-সদকার জন্য উৎসাহমূলক খুতবা প্রদান করেন। ফলে সাহাবারা এত অধিক পরিমাণ দান করলেন যে, খাদ্য ও পোশাকের দুইটি স্তুপ হয়ে যায়। এ দৃশ্য দেখে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত আনন্দিত হলেন এবং তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে যায়। শীতের এই মৌসুমে গরিব অসহায়কে শীতবস্ত্র দান করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দান করলে কারো সম্পদ কখনো কমেনা বরং তা বেড়ে যায়। তাই কষ্টে থাকা মানুষকে শীতবস্ত্র দান করলে মহান আল্লাহ দুহাত ভরে আপনাকেও দান করবেন। হাড়কাঁপানো এই শীতে যারা ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের দ্বীনি ও ঈমানি দায়িত্ব। কারণ শীত বস্ত্রহীন মানুষের জন্য এ পরিস্থিতি চরম বিপদ সমতুল্য। বিপদে পড়া মানুষকে সহযোগিতা করলে মহান আল্লাহ বান্দার বিপদ দূর করে দেবেন। হাদিসে পাকে আরও এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার সব বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবি মানুষকে সচ্ছল করে দেবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দেবেন।’ (মুসলিম) সুতরাং প্রতিটি মানুষের উচিত, অভাবি, বস্ত্রহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সামাজিক দায়বদ্ধতা, ধর্মীয় নীতি-নৈতিকা থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাড়ানো। শীতের এই প্রচণ্ড কষ্টে সামান্য সহযোগিতায় কেউ উপকৃত হলে খুশি হবেন মহান আল্লাহ। মহান আল্লাহকে খুশি করানোর এ কাজে সাধ্যমতো নিজেদের শরিক করি। আমিন। স্বদেশমৃত্তিকা মানব ঊন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান মোঃ আকবর হোসেন বলেন, আমরা মানুষের পাশে থাকার জন্য ২৪ ঘণ্টা চেষ্টা করি। কিন্তু সব সময় পারি না। মানুষের কাছে টাকা নাই। তারপরও চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের হাত খরচের টাকা থেকেই আমরা সেবা করি। স্বাদ তো অনেক আছে কিন্তু সাধ্য নেই।