রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা আর নেই

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা আর নেই

 বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা আর নেই

 


বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা (৭৯) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ২২শে আগস্ট রাত ৮টা ২০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯৪৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভোলা জেলার সদর উপজেলার কানাই নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা ছিলেন আলী হোসেন মিয়া এবং মাতা আছিয়া খাতুন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এপ্রিল মাসে তিন সপ্তাহের গেরিলা ট্রেনিং শেষে তৎকালীন এমপিএ তোফায়েল আহম্মেদের নেতৃত্বে এবং ভোলার হাইকমান্ড ছিদ্দিকুর রহমান গ্রুপের সঙ্গে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। বাংলাবাজারের টুনিরহাট, দেউলা তালুকদার বাড়ি, বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল মাঠ, দৌলতখান ও পেয়ার আলীর বেপারী বাড়ির ক্যাম্পে রাজাকার ও পাক সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। ভোলাকে পাক হানাদার মুক্ত করতে তাঁর অবদান অনন্য।

যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর সহযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন ছিদ্দিকুর রহমান, মোহাম্মদ শাহাজাহান, মাফুজুর রহমানসহ আরও অনেকে। মুক্তিযুদ্ধকালে সংগ্রাম পরিষদের প্রধান হিসেবেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ভোলা জেলা ইউনিটের প্রাক্তন জেলা কমান্ডার, ধনিয়া ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ভোলা আইন কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক, ভোলা জেলা আইনজীবী সমিতির ১৯৭৪-৭৬ মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক এবং হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। এছাড়া তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত হাইকোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভোলা সদরের মতিয়র রহমানের কন্যা হাসিনা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যার জনক। বড় ছেলে মোহাম্মদ খায়রুল হাসান বাংলা৫২নিউজের এইচআর এডমিন এবং ছোট ছেলে মো. মেহেদী হাসান (শিমুল) হাইকোর্টের স্বনামধন্য আইনজীবী।

গত বছর ১৩ই সেপ্টেম্বর তাঁর সহধর্মিনী হাসিনা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় হাইকোর্টে বাদ জোহর এবং দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তাঁর বাসস্থান পল্লবীর মোল্লা জামে মসজিদে। জানাজা শেষে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল অবদান, ত্যাগ ও কর্মজীবন আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।